বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যাওয়ার নিয়ম ও খরচ ২০২৬ | কুয়েতে কোন কাজে চাহিদা বেশি?
বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যেতে কত টাকা লাগে? ২০২৬ সালে কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং কোম্পানি ভিসার সুবিধা, বেতন, ভিসার দাম ও আবেদন পদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানতে আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে, কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি, ভিসার খরচ ও প্রসেস, এই আর্টিকেলে একসাথে সমস্ত বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করবো।
ভূমিকা
উন্নত আয়, নিরাপত্তা ও ভালো জীবন, এই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিবছর হাজারো বাংলাদেশি কুয়েতে পাড়ি জমাচ্ছেন।কিন্তু কুয়েতে যাওয়ার আগে অবশ্যই জানা দরকার, কোন কাজে চাহিদা বেশি, খরচ কত, ভিসা প্রসেস কেমন, এবং কোন পথে গেলে নিরাপদ?
এই আর্টিকেলে আমরা সহজ ভাষায় জানবো,
কুয়েতে কোন কাজে চাহিদা বেশি ২০২৬
বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যেতে কত টাকা লাগে
ভিসার সব ধরনের আপডেট খরচ
বেতন ও সুবিধা
কুয়েতে যাওয়ার নিরাপদ উপায়
চলুন শুরু করি আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সঠিক গাইডলাইন।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে যাওয়ার নিয়ম ২০২৬
কুয়েতে কাজ বা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যেতে হলে প্রথমেই যে কাগজপত্র লাগবে,
বৈধ ই-পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে)
সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে পাসপোর্ট সাইজ ছবি
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন
জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সনদ
চাকরির এগ্রিমেন্ট কপি (কোম্পানি ভিসার ক্ষেত্রে)
ভিসা স্ট্যাম্পিং সম্পন্ন হলে কুয়েতে পৌঁছে ইকামা (Residence Permit) করতে হয়।
এটি না করলে চাকরি করা আইন বহির্ভূত।
২০২৬ সালে কুয়েতে কোন কাজে চাহিদা বেশি? - বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা
লাগে
বিশ্বের মধ্যে কুয়েত এমন এক ধরনের দেশ যেখানে সবচেয়ে বেশি দক্ষ জনশক্তি রয়েছে
যে কোন কাজের ক্ষেত্রে। বর্তমান সময় কুয়েতে সবচেয়ে বেশি চাহিদা সম্পন্ন কাজ
গুলো হল,
কনস্ট্রাকশন (Helper, Mason, Welder)
রেস্টুরেন্ট (Waiter, Chef)
ড্রাইভিং (Light/Heavy Vehicle)
ইলেকট্রিশিয়ান
প্লাম্বার
টেকনিশিয়ান
ক্লিনার ও হোটেল সাপোর্ট স্টাফ
ভালো কাজ পেতে হলে কোম্পানি ভিসা নিয়ে যেতে হবে, কোম্পানিতে থাকা অবস্থায়
যেকোনো ধরনের কাজেই খুব ভালো সেলারি পাওয়া যায়। সঠিক উপায়ে আপনি যদি ভিসা
প্রসেসিং এর মাধ্যমে কুয়েতে যেতে চান সেক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ
হবে। বর্তমান সময়ে আপনি চাইলে সরকারিভাবে কুয়েতে ওয়ার্ক পারমিটে যেতে পারেন।
তবে এই জন্য আপনাকে অবশ্যই কুয়েত এম্বাসিতে যোগাযোগ করতে হবে অবশ্যই এই
পদ্ধতিতে আপনার খরচটা অনেকটা কমে আসবে। কুয়েত এম্বাসিতে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার
মাধ্যমে আপনি কখন শ্রমিক নিবে কি কাজ দিবে এই সকল বিষয়ে তথ্য জানতে পারবেন।
কুয়েত ভিসার দাম কত
আপনি যদি কুয়েতে যেতে চান তাহলে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে আপনি ওয়ার্ক
পারমিট এর বইতে যাবে কি স্টুডেন্ট ভিসায় কুয়েতে যাবেন। বর্তমান সময় যদি
আপনি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কুয়েতে যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার বর্তমান
সময়ের মোট খরচ আসবে 4 থেকে ৮ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। যেহুতু আপনি আমাদের
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে চাচ্ছেন।
সেহুতু এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, আপনি ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে
চান। তো বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি অনুযায়ী, আপনি যদি এখন বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক
পারমিট ভিসায় কুয়েত যেতে চান। তাহলে আপনার মোট খরচ এর পরিমান দাড়াবে প্রায় ০৪
লাখ থেকে ০৮ লাখ টাকা। সকল কাজ সম্পূর্ণ করার পরে আপনার ভিসার জন্য আবেদন
বিমান ভাড়া ইত্যাদিতে এ সকল টাকা পরিশোধ করতে হবে।
তবে বলে রাখা ভালো কুয়েত ভিসার দাম বর্তমানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। বর্তমান
সময়ের অন্যতম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি হলো কুয়েত। কুয়েতের কর্মীদের ৭০%
বিভিন্ন দেশ থেকে আসে বা প্রবাসী। দেশটির জনসংখ্যার বেকারদের ৩০ শতাংশ
নির্দেশে কাজ করে। ধনী হওয়ার উদ্দেশ্যে বা ভালো জীবন যাপন করার জন্য বিভিন্ন
দেশ থেকে এ দেশে কর্মী হয়ে আসে মানুষ।
বর্তমান সময়ে ড্রাইভিং শিখে এদেশে আসছে কর্মীরা এদেশে ড্রাইভিং করতে হলে
পারমিটের প্রয়োজন পড়ে প্রতিটি কুয়েতের ড্রাইভারের মাসিক বেতন বাংলাদেশি
টাকায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা হয়ে থাকে।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত ২০২৬
বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষই প্রবাস জীবন হিসেবে বেছে নেন কুয়েত। কেননা কুয়েত
বর্তমানে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই কুয়েত
কোম্পানি ভিসা কোন কাজের চাহিদা বেশি। আপনারা যদি বাংলাদেশ থেকে এটা জেনে
নিতে পারেন তাহলে কুয়েত গিয়ে আপনি ভালো টাকা উপার্জন করতে পারবেন। চলুন
জেনে আসি কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এ বিষয়েঃ
ড্রাইভিং ভিসা
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ভিসা
রেস্টুরেন্ট ভিসা
টেকনিশিয়ান ভিসা
ক্লিনার ভিসা
কন্সট্রাকশন ভিসা
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বেশিরভাগ মানুষ কুয়েতে কোম্পানির
ভিসাতে যেতে চাই বা গিয়ে থাকে। কোম্পানির ভিসাতে নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা
থাকার কারণে প্রবাসীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে এই কোম্পানির ভিসা গুলো। এখন
জানাবো কুয়েতে কোম্পানির ভিসা তে গেলে বেতন কত হতে পারে এ সকল বিষয়ে।
কাজের ধরন
মাসিক বেতন (কুয়েতি দিনার)
বাংলাদেশি টাকা (প্রায়)
কনস্ট্রাকশন হেলপার
100 KD
৩৬,০০০ টাকা
ইলেকট্রিশিয়ান
125 KD
৪৫,০০০ টাকা
ড্রাইভার
135 KD
৪৯,০০০+ টাকা
ওয়েল্ডার
115 KD
৪১,৫০০ টাকা
রেস্টুরেন্ট স্টাফ
120–140 KD
৪৩,০০০–৫১,০০০ টাকা
(হার পরিবর্তনশীল)
কুয়েত যাওয়ার সহজ উপায়
কুয়েত সাধারণত পর্যটন খাতের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত একটি ছোট্ট দেশ। এটি
ইরাক এবং সৌদি আরব এর মধ্যবর্তী একটি দেশ। কুয়েতের জনসংখ্যা বর্তমান সময়ে
প্রায় ৪২০০০০০ মিলিয়ন। সমৃদ্ধশালী দেশ হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের
উঁচু ভবন সোনালী সৈকত বিলাসবহুল রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ রয়েছে এই দৃষ্টিতে।
কুয়েতি মুদ্রা কে দিনার বলা হয়ে থাকে এছাড়া কুয়েতের সকল শ্রমিকদের মধ্যে
শুধুমাত্র বাংলাদেশী প্রবাসী রয়েছে 12% অপরদিকে এদেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা হল
আরবি এবং ইংলিশ। সাধারণত এদেশের জিডিপি নির্ভর করে প্রবাসীদের দক্ষতামূলক
কাজের কারণে।
উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় কুয়েতের নাম সবচেয়ে প্রথমে আসে কারণ জীবিকার
তাড়নায় প্রতিবছর বাংলাদেশ ও বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার প্রবাসী কুয়েতে
যায়। কুয়েতের ১ দিনার সমান বাংলাদেশি ৩৫৬.৯৭ টাকা। কুয়েতে
যাওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায় হলোঃ
একটি বৈধ পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে
ওয়ার্ক পারমিট নিতে হবে
ভিসা তৈরি করতে হবে
প্লেনের টিকিট
আপনি ওই দেশে গিয়ে যে পরিমাণ অর্থ খরচ করবেন তার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ
আপনার কাছে থাকতে হবে।
কুয়েত যাওয়ার সহজ ও নিরাপদ উপায়
সরকারি অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন
কুয়েত এম্বাসি/BOESL আপডেট অনুসরণ
ভুয়া ভিসা এজেন্ট এড়িয়ে চলা
কোম্পানি চুক্তিপত্র ভালোভাবে পড়ে সাইন করা
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি উপরে লেখা আর্টিকেলটি আপনার পছন্দ হয়েছে। এই আর্টিকেল এর
মাধ্যমে কুয়েতে কোন কাজে চাহিদা বেশি এবং পেতে যাওয়ার প্রসেস সম্পর্কে ধারণা
দেওয়ার চেষ্টা করেছি। উপরোক্ত আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকলে
অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে
শেয়ার করুন এবং এমন আর নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
Rajrafi.com এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url